(এই পোস্টে নিকোলা টেসলাকে নিয়ে বলা অনেক জিনিস আপনি আগেই জেনে থাকতে পারেন, খুব খুশি হবো যদি “এইগুলা তো আগেই জানতাম” বলে কমেন্ট বক্সে নিজের পাণ্ডিত্য জাহির করতে না আসেন। আপনার জানা অনেক জিনিস অনেকেরই অজানা থাকতে পারে!😀)
আপনি যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে পড়াশোনা করে থাকেন, তাহলে সেখানে টমাস আলভা এডিসনের ইলেকট্রিক বাল্ব আবিষ্কার বিষয়ক অধ্যবসায়ের দুর্দান্ত কাহিনী শুনবেন।
গুগলিয়েলমো মার্কনি কীভাবে আসলে রেডিও আবিষ্কার করেছেন এবং তার ফলে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন সেই বিষয়ে অনেক ঘটনা শুনতে পাবেন।
অনেকে বলে থাকে, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু রেডিও আবিষ্কারকে ভুলে অনলি মি থেকে পাবলিক করে দেওয়ার কারণে মার্কনী এই চুরিটা করতে পারছিলো।
তবে আমরা এইখানে দা রিয়েল বসকে মিস করতেসি যার নাম “নিকোলা টেসলা”!
(ইউটিউবের ভিডিওটা দেখলে বুঝবেন যে কত ট্রাই করেও নাইন টেনের ফিজিক্স বই থেকে আমরা টেসলার নাম বাইর করতে পারি নাই!)
এই মানুষটার আবিষ্কার দিয়ে বর্তমান দুনিয়ার ৮০% টেকনোলজি চলতেছে! কিন্তু ইলন মাস্কের টেসলা কোম্পানিটা না থাকলে আমরা হয়তো এই টেসলা ওয়ার্ডটার সাথে এত বেশি পরিচিতও হইতাম না! আসলে কে ছিলেন এই নিকোলা টেসলা? তার সাথে কি আসলেই এলিয়েনদের যোগাযোগ হইসিলো?
কেন তাকে ইতিহাসে এতটা অবহেলার চোখে দেখা হয়? টমাস আলভা এডিসনের সাথে তার ঝামেলাটা কী নিয়ে ছিল?
আর জনপ্রিয় Current War এর পরে নিকোলা টেসলার কোন কোন আবিষ্কার এখন খুব একটা বেশি আলোচিত হয় না, তবে সেগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পুরো ব্যাপারটাই আমি আজকের এই লেখায় ব্যাখ্যা করবো। তো চলুন শুরু করা যাক।
প্রথমে আমি আপনাদেরকে নিকোলা টেসলা বিষয়ক ৫টা বিতর্কিত ঘটনার সাথে পরিচিত করাবো। যার প্রথমটার নাম হচ্ছে The Martian Signal. ঘটনাটা উনিশশো সালের, এই নিয়ে ১৯২২ সালে নিকোলা টেসলা একটা কথা বলছিলেন। উনি বলতেছেন যখন Colorado Springs এ উনি ওয়ারলেস কমিউনিকেশন নিয়ে অনেক গবেষণা করতেছিলেন। তখন উনি তার অ্যাপারেটাসের মধ্যে কিছু সিগন্যাল ধরতে পারেন। যেই সিগন্যালটা কোনোভাবেই পৃথিবীর কোনো সিগন্যালের সাথে মিলবে না! উনি ধারণা করতেছিলেন, যেহেতু মার্স বা মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর তুলনামূলকভাবে কাছে অবস্থিত। এই সিগন্যালটা হয়তো সেখান থেকেই আসতেছে,
এবং তিনি সিগন্যালটা ইন্টারপ্রেট করছিলেন অনেকটা এইভাবে, যে 1234 অর্থাৎ নাম্বার বা অংক দ্বারা। তার কারণ উনি ভাবতেন নাম্বার বা অংক হচ্ছে একটা Universal Language। এইটা দিয়ে এলিয়েনরাও যেমন কথা বলতে পারে মানুষরাও কথা বলতে পারে।
এবং এই কারণে তাঁর দাবি অনুযায়ী মঙ্গলগ্রহে যে মার্শানরা আছে তারা নাম্বারের মাধ্যমে আমাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেছে!
এই সিগন্যালটার নামই হইতেছে The Martian Signal।নিকোলা টেসলা কিন্তু এমনিতে নাম্বার নিয়ে অনেক ক্রেজি ছিলেন! ওনার সবচেয়ে প্রিয় নাম্বারগুলা হচ্ছে থ্রী, সিক্স, নাইন।
উনি যেই রুমে মারা গেছেন ওই রুমের নাম্বারের মধ্যেও দুইটা থ্রী ছিল। উনি মোটামুটি Obsessed ছিলেন এই থ্রী, সিক্স, নাইন এই নাম্বারগুলা নিয়ে।
এমনকি বলা হইতো উনি নাকি উনার হোটেল রুমের মধ্যে প্রথমবারে ঢুকতেন না। তিনবার চক্কর লাগানোর পরে তারপরে যেয়ে হোটেলের মধ্যে ঢুকতেন, কারণ ওই তিন নাম্বারটা ওনার মিলাইতে হবে! এখন যে মার্শান সিগন্যালের কথা আমরা বলতেছিলাম না। ওইটার পক্ষে কিছু লোক ছিল বিপক্ষেও অনেক বেশি লোক ছিল। পক্ষের লোকজনের মধ্যে খুবই বিখ্যাত একজন হচ্ছে নাম Lord Kelvin.
উনি টেসলাকে সমর্থন দিছিলেন যে, না মার্স থেকে এরকম সিগন্যাল আসতে পারে, কোনো সমস্যা নেই। বাট উনার সমালোচকরা যেটা বলতেছিলো তার মধ্যে অনেক বড় একজন হচ্ছেন G.N. Watson. উনি উনার ১৯১৯ সালের পেপারের মধ্যে বলছেন যে, পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ার, এই আয়নোস্ফিয়ারকে কিন্তু নিকোলা টেসলা অনেক অনেক বেশি গ্লোরিফাই কইরা বলছেন যে এইটার ক্ষমতা আমরা ইউজ করতে পারতেছি না। এইটার ক্ষমতা অনেক বেশি! ওই আয়নোস্ফিয়ারের মধ্যে একটা লেয়ার আছে, যার নাম হইতেছে Kennelly-Heaviside layer।
ওইখানে ionized গ্যাস আছে। বলা হয় এইটা পৃথিবী থেকে ৯০ কিলোমিটার কিংবা ১৫০ কিলোমিটার উপরে অবস্থিত। ওই লেয়ারটার কারণে বাইরে থেকে কোনো এক্সট্রা Terrestrial Signal পৃথিবী পর্যন্ত আইসা পৌঁছাবে এইটা কোনদিন সম্ভব না। এইটা জি এন ওয়াটসনের কথা ছিল। টেসলা যেটা দাবি করতেছিলো যে মার্স থেকে কিছু সিগন্যাল পৃথিবীতে আসতেছে অ্যান্ড তিনি সেটা ক্যাপচার করতে পারছেন, এই দাবিটা সঠিক না। তেমনিভাবে টেসলার অনেক পাড় ফ্যান যারা আছে, তারাও টেসলাকে এইটার কারণে সমালোচনা করেন যে তিনি এলিয়েন আছে এই অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেছেন। এত বড় মূর্খতা টেসলা কেন দেখাইছেন(!), এইটা নিয়ে তারা অনেক বেশি সমালোচনা টেসলাকে করে থাকেন। তো এলিয়েনদের সাথে আসলে নিকোলা টেসলার যোগাযোগ হইছিলো কি হয় নাই এইটা নিয়া দুই পক্ষেই বিতর্ক আছে। ইভেন এলিয়েন আদৌ আছে কি নাই এইটা নিয়েও এখনো বিতর্ক আছে।
দ্বিতীয় ঘটনা, এইটার নাম The Philadelphia Experiment. এক্সপেরিমেন্টটা ছিল এইরকম, একটা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বা তড়িৎ চৌম্বক ফিল্ড বা ক্ষেত্র থাকবে। ওই ক্ষেত্রের ভেতরে আপনি যদি আপনার নৌবাহিনীর জাহাজটাকে আইনা দেন তাইলে ঐ জাহাজটা শত্রুপক্ষের রাডারের কাছ থেকে অদৃশ্য হয়া যায়!
এতে সুবিধা হইতেছে শত্রুপক্ষ রাডারের ভিতরে ইভেন ইফ যদি জাহাজটা ঢুকেও, আপনার জাহাজকে সে আইডেন্টিফাই করতে পারবেনা! এক্সপেরিমেন্টটা করা হইছিল বলা হয় অক্টোবর ২৮, ১৯৪৩ এ। US Navy Destroyer নামে একটা জাহাজ Elridge এই জাহাজটাকে একটা ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক ফিল্ডের ভিতরে নিয়ে রাডার থেকে অদৃশ্য করার একটা এক্সপেরিমেন্ট করা হইলো।
আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে এই, জাহাজটা শুধুমাত্র রাডার থেকেই যে অদৃশ্য হইছে ব্যাপারটা এইরকম না, জাহাজটা পুরাটাই গায়েব হয়া গেছে। আমি জানি এইরকমভাবে আপনার অনেককেই গায়েব কইরা দিতে ইচ্ছা হবে, কিন্তু এইভাবে গায়েব হয়া যাওয়া আসলে কোনো ভালো লক্ষণ না। পরবর্তীতে দেখা যায় যেই জায়গা থেকে জাহাজটা অদৃশ্য হইছে, জাহাজটা পরে আবার আবির্ভূত হইছে, আবার বাস্তবে ফেরত আসছে, সেই বাস্তবে ফেরত আসার জায়গাটা হচ্ছে ওই জায়গা থেকে একশ মাইল দূরে! অর্থাৎ ফিলাডেলফিয়া থেকে অনেক দূরে Norfolk, Virginia বলে একটা জায়গা আছে, ঐখানে সে আসছে এবং জাহাজের মধ্যে যেই ক্রুরা ছিল অনেকেই সেইখানে ছিল না অর্থাৎ তারা অদৃশ্য হয়া গেছে, তারা এখন কোথায় গেছে এটা কেউ জানে না! এই ভাবে যে ফিলাডেলফিয়া থেকে জাহাজটাকে ভার্জিনিয়াতে নিয়ে যাওয়া হইলো ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ডের ভিতর দিয়ে এইটাই কিন্তু হচ্ছে Teleportation এবং বলা হয় সিক্রেট রিপোর্টের মধ্যে নাকি এরকম লেখা আছে নিকোলা টেসলাই এই এক্সপেরিমেন্টের পুরা ডিজাইনটা, ড্রইংটা করছিলেন এবং জেনারেটরগুলা সাপ্লাই দিছিলেন এবং ইতিহাসে এইটাকে একটা অদ্ভুত ঘটনা হিসেবেই কিন্তু চিহ্নিত করা হয়। এই ঘটনাটা অনেক বেশি জনপ্রিয় হইলেও এখন কিন্তু এটাকে একটা Hoax হিসেবে ধরা হয়।
ইউএস নেভি নিজেরাই বলছে, এইরকম কোনো ঘটনা বা এক্সপেরিমেন্ট কোনোদিন হয় নাই, তারা করে নাই এমনকি Elridge এর ফ্যাক্ট কিংবা কমন এক্সেপ্টেড ফিজিক্সের আন্ডারেও এইরকম ঘটনা ঘটানো পসিবল না। এমনকি নিকোলা টেসলা কিন্তু মারাও গেছে জানুয়ারি ৭, ১৯৪৩ এ।
তার অনেক পরে অক্টোবর ২৮, ১৯৪৩ সালে আইসা এই এক্সপেরিমেন্টটার কথা বলা হইতেছে। টেসলাপ্রেমীদের কাছে এই ফিলাডেলফিয়া এক্সপেরিমেন্টটা অনেক বেশি জনপ্রিয় হইলেও এইটা যে একটা গুজব এই ব্যাপারেই বেশি জনমত দেখা গেছে!
তৃতীয় ঘটনা টেসলা এবং টাইটানিক।
নিকোলা টেসলা অনেক বেশি পরিমাণে প্রেডিকশন করতে পারতো। তার চোখের সামনে নাকি ভবিষ্যৎ ভাসতো। সে দাবি করত সে ফিউচার দেখতে পারে! এরকম দুইটা ঘটনা আছে যেইখানে তার বন্ধুদেরকে তিনি বাঁচাইছিলেন ফিউচার প্রেডিকশন এর মাধ্যমে। এক নাম্বারটা হচ্ছে জেপি মরগান এর ক্ষেত্রে।
নিকোলা টেসলা ডিরেক্টলি জেপি মরগানকে এইভাবে পরামর্শ দিছিলেন যে বন্ধু তুমি যায়োনা টাইটানিক এর মধ্যে। টাইটানিকটা ঢুবতে পারে। এন্ড শেষ পর্যন্ত টাইটানিক ডুবছে! যদিও শোনা যায় এই টাইটানিক ডোবার পিছনেও নাকি অনেক বড় বড় পরিবারের হাত আছে। বাট এইগুলা সব conspiracy theory, হইতেও পারে, নাও হইতে পারে।
১৮৯০ সালে তার এক বন্ধু ফিলাডেলফিয়াতেই, সে একটা ট্রেন ভ্রমণের জন্য যাইতেছিল। টেসলা তাকে থামাই দিছে এন্ড বলছে বন্ধু ট্রেনের মধ্যে যায়োনা এন্ড পরবর্তীতে দেখা গেছে ওই ট্রেনটা আসলেই একটা এক্সিডেন্ট এর মধ্যে পরছে!
অনেক মানুষ আমাকে স্বাপ্নিকভাবে আমার আইডিয়া শুইনা হাসে, আমাদের এই পৃথিবী superficial people দের প্রতি অনেক generous। সময়ই এইখানে বিচার করবে।
টেসলার এই জিনিসটা কিন্তু বর্তমানকালের জিনিয়াসদের মধ্যেও কমন। নিকোলা টেসলা যেরকম বলতেন উনি আসলে একটা পরিবাহকের মতোন, kind of অন্য কেউ তার কাছে জ্ঞানটা দিয়ে দিতেসে এন্ড তিনি এই জ্ঞানটা মানবজাতির মধ্যে সরবরাহ করতেছেন। এরকমভাবে কিন্তু রামানুজন এর ক্ষেত্রেও আমরা দেখছি।
আপনারা যদি The Man Who Knew Infinity মুভিটা দেখেন সেখানে দেখবেন শ্রী রামানুজন কিন্তু বারবারে বলতো, তার মুখে কেউ একজন আইসা এই অংকের সূত্রগুলা দিয়া যাইতেছে এন্ড তিনি জাস্ট এই সূত্রগুলাকে কাগজে-কলমে লিখতেছেন। এটা আসলে কেন তার কাছ থেকে আসতেছে, কীভাবে আসতেছে তার কোনো ব্যাখ্যা তার কাছে ছিল না! ইভেন রিসেন্ট মিউজিশিয়ানদের ইন্টারভিউগুলা আপনি দেখেন। এ আর রহমান যখন কোনো গান কম্পোজ করেন তখন বলা হয় যে তার রুমের মধ্যে কেউ থাকতে পারবে না। তার সাথে নাকি একটা স্পিরিচুয়াল কানেকশন থাকে এন্ড ওই ভাবেই একটা গান তার ভিতর দিয়ে আসে। অনেকেই কিন্তু বলে থাকে যে এ আর রহমানের ২০১১ সালে যে Rockstar মুভিটা ছিল ওইটার যে Kun Faya Kun গানটা ছিল ওই গানটার স্পিরিচুয়ালিটি ইফেক্ট এতটা বেশি যে, ওইটা শুনলে আপনি সারাক্ষণ শুনতেই থাকবেন এরকম মনে চায়।
এন্ড ওই গানটার মধ্যে কিছু একটা অন্যরকম আছে যেটা আসলেই মানুষের পক্ষে ক্রিয়েট করা হয়তো সম্ভব না! ইভেন লাস্ট কিছুদিন আগে Amit Trivedi এর সাথে Yashraj Mukhate এর একটা ইন্টারভিউ হইছিলো।
Amit Trivedi এইখানে বলছেন যে উনার বেশিরভাগ গান নাকি, গানের টিউন যেটা আছে ওইটা আসে ওনার ঘুমের মধ্যে, ইভেন সকাল ছয়টার সময় হইলেও উনি ঘুম থেকে উইঠা ওই টিউনটাকে আগে কম্পোজ করেন। এন্ড কম্পোজ-টম্পোজ কইরা তারপরে উনি আবার ঘুমাইতে যান কারণ টিউনটা আবার কোন সময় হারায়া যায় এইটা উনি বলতে পারেন না। এইযে স্পিরিচুয়াল একটা কানেকশন আছে এত বড় বড় ক্রিয়েটরদের মধ্যে, এইটা নিকোলা টেসলার মধ্যেও ছিল, রামানুজনের মধ্যেও ছিল ইভেন হাল আমলের যে মিউজিক ডিরেক্টররা আছে তাদের মধ্যেও আছে বইলা আমরা দেখতে পাইতেছি।
৪ নাম্বার জিনিস, Tesla and Free Energy! নিকোলা টেসলার কিন্তু অনেক বড় একটা স্বপ্ন ছিল। উনি World Power System বা WPS বানাবেন।
যার মাধ্যমে পুরা ওয়ার্ল্ডের মধ্যে উনি ওয়্যারলেসভাবে পাওয়ার ট্রান্সমিশন করবেন অর্থাৎ আমরা এখন যে কারেন্ট সাপ্লাই করি না এটাতো তারের মাধ্যমে করি। তার ছাড়া কি কোনো সময় কারেন্ট আপনি আসতে দেখবেন? দেখবেন না। নিকোলা টেসলার প্ল্যান ছিল, যেরকমভাবে আমরা রেডিও সিগন্যাল ট্রান্সফার করি, আমরা এভাবে ইলেকট্রিক পাওয়ারও ওয়্যারলেসভাবে ট্রান্সফার করতে পারি কিনা। এন্ড উনি এইটা নিয়ে প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন যার এক্সাম্পল হচ্ছে Wardenclyffe Tower, যেখানে উনি বিশাল একটা টেসলা কয়েল বানাইছিলেন।
জেপি মরগান এইখানে অর্থায়ন করছিলো। সমস্যাটা ছিল ওই সময়ে রেডিও টেকনোলজির উপরে এতো বেশি ইনভেস্টমেন্ট দেওয়া হইতেছিল, মানুষজন রেডিও নিয়া পুরা একদম কাঁপাকাঁপি অবস্থা লাগায় দিছে! এন্ড রেডিও ওইসময় একটা Craze ছিল! সবাই চাইতো এই রেডিও এর উপরে ইনভেস্ট করতে। নিকোলা টেসলাকে বলা হয় হয়, তিনি মার্কনীর প্রায় ৫ বছর আগে থেকেই রেডিও টেকনোলজিগুলাকে আবিষ্কার করে ফেলছিলেন।
এন্ড মার্কনী যে লাস্ট পর্যন্ত এই রেডিওটা আবিষ্কার করতে পারছে, তার একটা বিরাট অবদান ছিল কারণ মার্কনী নিকোলা টেসলার কাজগুলা পড়ছিলেন এর আগে। এখানে অবশ্যই জগদীশ চন্দ্র বসুর নামও আসবে বাট টেসলা এই রেডিও নিয়ে কাজ করাকে Mediocrtity ভাবতেন! উনি ভাবতেন এইটা নিয়ে অনেক মানুষ কাজ করতেছে, এইটা অনেক পুরাতন একটা টেকনোলজি এন্ড সহজ একটা টেকনোলজি। এইটা নিয়ে যে কেউ যেকোনো কিছু করতে পারবে বাট উনার চিন্তা ছিল আরো সুদূরপ্রসারী, উনি ফিউচারিস্টিক ছিলেন! উনি বলছিলেন যে, আমি এমন একটা দুনিয়া বানাবো যে দুনিয়ার মধ্যে তারের মাধ্যমে কারেন্ট ফ্লো করাইতে হবে না। এইটাকেই কিন্তু ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশন বলা হইতেছে, কিন্তু জেপি মরগান এইটার সাথে একমত হন নাই, টেসলার সাথে। উনি রেডিও চাইতেছিলেন। রেডিও রেডিও করতে করতে মুখে ফেনা তুইলা ফালাইছেন! কিন্তু টেসলার হইতেছে এই একটা বাজে অভ্যাস। অন্য মানুষের কাছ থেকে বইলা আনবে টাকা যে আমি এইটা করবো, কিন্তু সে তার নিজের ড্রিম প্রজেক্ট এর মধ্যে ওই টাকাটা বাস্তবায়ন করবে। এইটা আমাদের কাছে খুব ভালো মনে হইতে পারে, কিন্তু আপনি জেপি মরগানের কথা একবার চিন্তা করেন। তার তো টাকা লাগবে, তার তো প্রফিট অর্জন করা লাগবে। এখন ওই সময়ের মানুষের কাছে এই ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশনটা আসলেই একটা অকল্পনীয় জিনিস ছিল! তুমি রেডিওর জন্য টাকা নিয়ে তুমি এই কাজ কেন করতেছো। পরে উনার যেই ঋণ ছিল ওই ঋণগুলা মিটানোর জন্য ওই Wardenclyffe Tower টাকে কিন্তু ভাইঙা ফেলা হয়। ওইটার পার্টস টার্টস বেঁইচা নাকি উনি ওনার ঋণ পরিশোধ করছিলেন।
এখন একটা জিনিস বলেন তো যদি পুরা ওয়ার্ল্ডের মধ্যে ফ্রিতে বিদ্যুৎ সবাই পায়, এবং পুরা ওয়ার্ল্ডের যেকোনো টেকনোলজি সবসময় কারেন্ট দিয়াই চলে, তাইলে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা কার হবে? এইটা আপনার টেসলা কোম্পানির এক্সপেরিয়েন্স থেকেই বলতে পারবেন। টেসলা বা বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির প্রচলনটা অনেক মানুষই হইতে দিতে চায় না, তার কারণ এইটা হইলে পুরা ওয়ার্ল্ডের যেই তেল ইন্ডাস্ট্রি আছে,সেইটার মধ্যে ধস নামবে। ফসিল ফুয়েল অন্য যতগুলা আছে প্রাকৃতিক গ্যাসসহ প্রত্যেকটা ইন্ডাস্ট্রিতে ধস নামবে কারণ বিদ্যুৎ দিয়ে আসলে এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলিভাবে কিন্তু আমরা অনেক কিছু করতে পারি, গাড়ি চালাইতে পারি। আমাদের কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ অনেক কম হবে। সেই জায়গায় ফসিল ফুয়েল ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু পরিবেশের অনেক বেশি ক্ষতি সাধন করে।
পাঁচ নাম্বার ঘটনা Death Ray বা মরণ রশ্মি।
টেসলা যেই প্ল্যানটা করছিলো, একটা রে বা পার্টিকেল বিম যেইটাকে বলতেছে ওরা। টেসলা এইটার নাম দিছে Teleforce। এইটার মাধ্যমে ২৫০ মাইলের ভিতরে থাকা কোনো শত্রুপক্ষের জাহাজ, এরোপ্লেন, বা এই জাতীয় যেকোনো কিছুকে ধুম কইরা ধ্বংস কইরা দেওয়া যাবে!
পুরা নিউইয়র্ক সিটির যত পাওয়ার আছে প্রায় ২ মিলিয়ন হর্সপাওয়ারের মতন। এইটাকে একটা রেতে উনি কনভার্ট করবেন এই রেটারই নাম তৎকালীন সময়ের যেই মিডিয়া ওরা প্রচার করতেছিল Death Ray নামে।
কিন্তু টেসলা এইটা ডেথ রে বলতে অস্বীকার করছিলেন কারণ এই Ray এর মাধ্যমে কোনো মানুষ মারা যাবে না বলে তার দাবি ছিল। তিনি এইটার নাম দিছিলেন টেলিফোর্স। উনার আইডিয়াটা ছিল পৃথিবীর আয়নোস্ফিয়ার কে ইউজ করে পুরা পৃথিবীর চারপাশে একটা বল অফ এনার্জি বানাবেন এবং তিনি এটা করতে সমর্থ হইছিলেন একটা ৫০ ফুট লম্বা টেসলা কয়েলের দ্বারা। যদিও নিকোলা টেসলা দাবি করতেছেন এইটা দিয়ে মানবজাতির খুব বেশি ক্ষতি হবে না, কিন্তু আলটিমেটলি কেউ এটা বিশ্বাস করে নাই কারণ মানুষটা ছিল টেসলা!
এই ঘটনাগুলা দিয়া আপনারা বুইঝা গেছেন যে নিকোলা টেসলা আসলে কেন এতটা বিতর্কিত একটা চরিত্র। এবং তাকে কিন্তু নোবেল প্রাইজও দেওয়া হয় নাই। বলা হয় টমাস আলভা এডিসন এবং নিকোলা টেসলাকে একসাথে ফিজিক্সে নোবেল প্রাইজ দেওয়ার জন্য প্ল্যান করা হইছিলো। কিন্তু নিকোলা টেসলা সেটা অস্বীকার করছেন, যে আমি এডিসনের সাথে একসাথে নিবো না। কেন করছেন এডিসনের সাথে সমস্যাটা এইটা আমরা অনেকেই অলরেডি জানি। আমিও কিছুটা বলবো একটু পরে। এইটা একটা রিজন যে তাকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয় নাই। যদিও মার্কনী কিন্তু এত রদ্দি একজন বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলার তুলনায় তিনি কিন্তু নোবেল প্রাইজ পাইছেন!
ক্রোয়েশিয়ায় স্মিলজান নামে একটা গ্রাম আছে যেখানে ১০ জুলাই, ১৮৫৬ সালে অর্থাৎ আজকের এই দিনেই নিকোলা টেসলা জন্মগ্রহণ করেন।
যদিও তিনি কিন্তু একজন সার্বিয়ান। এবং এই কারণে আমেরিকায় যাওয়ার পরে তাকে অনেক পঁচানির স্বীকার হইতে হইছে। আজকে নিকোলা টেসলার জন্মদিন এইটা একটা কারণ, আমি কেন নিকোলা টেসলাকে নিয়ে ভিডিও বানাইতেছি। তার আরেকটা কারণ হচ্ছে, আমার বন্ধু ধীমান রায় নিকোলা টেসলার পাড় ভক্ত।
শোনা যায়, নিকোলা টেসলা যদিও জীবনে কোনোদিন বিয়ে করেন নাই। উনার একদম শেষ বয়সে উনি কবুতরের প্রতি অনেক বেশি Obsessed হয়া গেছিলেন,
এবং বলা হয় একটা কবুতর তার এমন ছিল যেইটাকে তিনি তার প্রেমিকা মনে করতেন! তাকে অনেক বেশি ভালোবাসতেন, যেমনভাবে তিনি একজন মানুষকে ভালোবাসতেন। আমার খুবই দৃঢ় বিশ্বাস, ওই কবুতরটা ধীমানই ছিল! এবং এই জন্মে সেই মানুষ হয়ে জন্ম নিছে!😂
নিকোলা টেসলা যেইদিন জন্ম নিছিলেন অর্থাৎ আজকের এই ১০ জুলাই, ওইদিন প্রচণ্ড বৃষ্টি হইতেছিলো এবং বাইরে অনেক বজ্রপাত হইতেছিল Lightning হইতেছিলো। এই কারণে যে Midwife তার জন্মের সময় কাজ করতেছিলেন তিনি বলছিলেন “This child will be a child of darkness!” মানে এই পিচ্চি অন্ধকারের পিচ্চি হবে। কিন্তু উনার মা এইটাকে সংশোধন কইরা বলছিলেন, “No. He will be a child of light.” ও আসলে লাইট বা বিদ্যুৎ বিষয়ক পিচ্চি হবে!
সিরিয়াসলি নেওয়ার পরে নিকোলা টেসলা আসলেই বিদ্যুৎ নিয়া কাজ করা শুরু করছেন।
যাদের অ্যাস্ট্রোলজি নিয়া আগ্রহ আছে তারা দেখি নিকোলা টেসলার বার্থ চার্ট বা নাটাল চার্ট নিয়া অনেক বেশি আগ্রহী।
উনার নাটাল চার্টের মধ্যে এইটা বলা আছে।
Tesla has natal Uranus in Taurus at (23° 6’) in the first house. This is just so cool.
এখন এইটা দিয়া আসলেই কী বুঝায়, আমি নিজে কিচ্ছু জানি না। অ্যাস্ট্রোলজি নিয়া আমার আগ্রহ নাই, আমার অ্যাস্ট্রোনমি নিয়া আগ্রহ আছে।
অ্যাস্ট্রোলজি নিয়া বলতে আমি বেশিরভাগ সময় ছুটির দিনে হাইয়েস্ট কাওসার আহমেদ চৌধুরীর “আপনার রাশিফল” টা পড়তাম, এইটার বেশি আর কিছুই না। আমার জন্মদিনও জুলাইয়ে, কিন্তু কোনদিন ওইটা বলব না। “LEGENDS ARE BORN IN JULY” এই কথাটা এমনি এমনিই টিশার্টের গায়ে লেখা থাকে না!
নিকোলা টেসলার জন্মও কিন্তু জুলাইয়ে।
তো নিকোলা টেসলার বাপ চাইছিলো যে ও Priest হবে। অর্থাৎ নিকোলা টেসলার বাপও একজন Priest ছিলো, উনি চাইছিলেন টেসলাও এইরকম একজন Priest হবে। কিন্তু টেসলার ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল, উনি একজন ইঞ্জিনিয়ার হবেন। উনার একবার কলেরা হইলো, এবং খুবই মারাত্মক কলেরা, প্রায় মারা যায় যায় অবস্থা। এইসময় উনি বলছিলেন যে উনি যদি কলেরা থেকে বের হন, তার বাবাকে বলছিলেন, যে আমাকে ইঞ্জিনিয়ার হইতে দিয়েন। তো তার বাবা ওইসময় মাইনা নিছেন, যে যা ঠিক আছে তুই তোর যেইডা মন চায় ওইডাই হইস তুই। এবং পরে দেখা গেল আসলে সত্যি সত্যিই সে কলেরা থেকে ভালো হয়া গেছে, এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক পড়াশোনা করার জন্য সে তার পরের থেকে লাইগা পরছে। এখন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া নিয়া তার এত প্যাশন, বাংলাদেশে থাকলে আসলেই থাকতো কিনা, ব্যাপারটা নিয়া আমার ডাউট আছে। বলা হইতো উনি নাকি ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস বা ক্যালকুলাসের যে ইন্টিগ্রেশন আছে এইটা অনেক সহজে নিজের মাথার মধ্যেই কইরা ফেলতে পারতেন এন্ড এই কারণে টিচাররা তাকে অপবাদ দিতো যে উনি পরীক্ষার মধ্যে চিটিং করতেছে। যারা বুয়েট এডমিশন টেস্টের মধ্যে ইন্টিগ্রেশন বাদ দেওয়ার ধান্দা করে, তাদের নিকোলা টেসলাকে পীর মানা উচিত।
টেসলা যদি বুয়েট এডমিশন টেস্ট দিতো, তাইলে তার খুব একটা বেশি কষ্ট হইতো না, এইটা আপনারা আশা করি বুঝতে পারতেছেন।
নিকোলা টেসলা যেকোনো ধরণের ফিজিক্যাল কনট্যাক্ট অর্থাৎ আপনার সাথে হ্যান্ডশেক করবে,এইরকম হ্যান্ডশেক ট্যান্ডশেক এইসব থেকে অনেক দূরে থাকতে পছন্দ করতেন। ইভেন উনি লোকদের সাথে হ্যান্ডশেক করা এড়ায় চলতেন এইটা বইলা যে তার ল্যাবরেটরির এক্সিডেন্টে তার হাত Injured হয়া গেছে, আহত হইছেন তিনি। এই কারণেই তিনি হ্যান্ডশেক করতে পারতেছেন না। এইভাবে মিথ্যা বলতেন! উনি জীবনে কোনদিন কোনো রোম্যান্টিক রিলেশনশিপে জড়ান নাই। কিন্তু একসময় একজন Female Acquaintance এর সাথে তার রিলেশনশিপ হইতে যাইতেছিলো এবং তিনি তাকে যখন তার ফার্স্ট কিস করতে যাইতেছিলেন, নিকোলা টেসলা পালায় গেছিলেন, এই অদ্ভুত এক রিলেশনশিপে না জড়ানোর জন্য! যদিও ২০০৮-১১ সালে Sanctuary নামে একটা সিরিজ ছিল, ওইখানে নিকোলা টেসলা একটা ক্যারেক্টার ছিল, তাকে সেইখানে এইটা করতে দেখা গেছে, বাট এখন মোটামুটি আমরা এটাকে অবাস্তব ধরতে পারি। নিকোলা টেসলার জুয়া খেলার প্রতি একটা বেশ ভাল রকমের অ্যাডিকশন ছিল।
উনি ওনার প্রচুর টাকা এইটাতে উড়াইছেন। উনার বাপ এইটার বিরোধী ছিল কিন্তু উনার মা কো্নো না কোনো কারণে এইটাকে কেন জানি সাপোর্ট দিতেছিলেন। নিকোলা টেসলার জীবনে তার মা অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখছেন।
উনার যে এত ইনভেনশনের দক্ষতা, এইটা নাকি তার মায়ের কাছ থেকেই আসছে। উনার মা হাউজহোল্ডের বিভিন্ন জিনিস কীভাবে আরো সহজে করা যায়, এইটার জন্য নিজে নিজেই ইনভেন্ট করতো বিভিন্ন যন্তপাতি, হ্যান্ডিক্রাফট বলেন বা যেকোনো কিছু। সে নিজেরটা নিজে মেইক করতো।
অনেকটা এইটাকে আপনি তুলনা করতে পারেন Casey Neistat এর যে ভাই আছে(Van Neistat) তার চ্যানেলের সাথে।
যাই হোক পরবর্তীতে একসময় এই জুয়াখেলা তিনি ছাড়তে সক্ষম হন। পড়াশোনা করেন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হন। তারপরেই টমাস আলভা এডিসনের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। ১৮৮৪ সালে তিনি আমেরিকাতে আসেন এবং Edison Machine Works এর মধ্যে কাজ করা শুরু করেন। তার প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটা ছিল এইরকম এডিসনতো কাজ করতো ডিসি অর্থাৎ ডিরেক্ট কারেন্ট এর যেই জেনারেটরগুলা আছে ওইগুলা নিয়া। তো টেসলাকে বলছিলো, তুমি আমার এই ডিসি জেনারেটরগুলার ক্ষমতাকে আপগ্রেড করবা। তো সেইভাবেই নিকোলা টেসলা অনেক কাজ টাজ করছে। তিনি প্রত্যেকদিন ওভারটাইম করতেন, তার নিজের আইডিয়াগুলা নিয়া খেলা করতেন ওই কোম্পানির ভিতরেই এবং তার ডিজাইনটা যখন টমাস আলভা এডিসনকে দেখানো হইছিল আলভা এডিসন বলছিলেন যে তাকে ৫০ হাজার ডলার দেওয়া হবে। কিন্তু ডিজাইন করা শেষ হওয়ার পরে তাকে সেই ৫০ হাজার ডলার দেওয়া হয় নাই। আলভা এডিসন তখন বলছিলেন, তুমি আমাদের আমেরিকান হিউমার বুঝোনা! এইটা আমি একটা হিউমার করছিলাম, আস্তে আস্তে থাকো এইখানে সবকিছু বুইঝা যাবা। টেসলা তখন অনেক রাগ হইছিলেন। তারপরে এডিসনের কোম্পানি ছাইড়া দিয়ে নিজে আরেকটা জায়গায় কাজ করা শুরু করছেন। আলভা এডিসনের সাথে তার ঝামেলার কিন্তু এইখান থেকেই শুরু। ওইসময় আলভা এডিসন যেরকমভাবে কাজ করতেছিলেন, একটা ডিসি পাওয়ার স্টেশন থেকে আশেপাশের খুব বড় একটা জায়গা আপনি কারেন্ট সাপ্লাই করতে পারবেন না। কিন্তু যেইটা অল্টারনেটিং কারেন্ট আমরা বলতেছি, যেইটা সময় সময় তার দিক পরিবর্তন করে, এই কারেন্টের মাধ্যমে পাওয়ার লসটাকে ট্যাকেল করা সম্ভব হয় এবং এর মাধ্যমে অনেক দূরের একটা পাওয়ার স্টেশন থেকে। সাপোজ আশুগঞ্জ এর পাওয়ার স্টেশন থেকে আমি ঢাকার মধ্যে কারেন্ট সাপ্লাই করতে পারতেছি। এইটা টমাস আলভা এডিসনের যেই কারেন্ট, ডিরেক্ট কারেন্ট এইটা দিয়ে সম্ভব ছিল না। Pittsburgh এর একজন ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট ছিলেন, যার নাম George Westinghouse.
উনি যায়া টেসলাকে বলছেন ঠিক আছে আমি তোমার আইডিয়ার সাথে একমত। আমিও বিশ্বাস করি ডিসি আসলে ভবিষ্যৎ না, আমাকে এসির দিকে যাইতে হবে। তখন ওয়েস্টিংহাউস টেসলার পেটেন্টকে ৬০,০০০ ডলার ক্যাশ কিংবা স্টক এর মাধ্যমে দিয়ে কিনে নিছিলেন এবং বলছিলেন এই এসি কারেন্ট এর প্রত্যেক হর্স পাওয়ার জেনারেশন হইলে নিকোলা টেসলা ২.৫ ডলার করে পাবে।
এন্ড এর মাধ্যমে নিকোলা টেসলা মোটামুটি সচ্ছলভাবে একটা জীবনযাপন করতে পারতেছিলেন। কিন্তু এই এসি যখন জনপ্রিয় হয়া উঠতেছিলো, Edison Illuminating Company, এডিসনের যেই কোম্পানিটা সেইটা কিন্তু মাইর খাইতেছিলো কারণ ওইটা ডিরেক্ট কারেন্ট ছিল। এডিসন এইটা কোনোভাবেই মাইনা নিতে পারে নাই যে টেসলার করা অল্টারনেটিং কারেন্ট এতটা বিখ্যাত হইতেছে আর সে এইদিকে মাইর খাইতেছে। যেই এডিসনকে ‘Wizard of Menlo Park’ বলা হইতো ওই এডিসন আজকে এক পিচ্চি ইঞ্জিনিয়ারের হাতে পরাজিত হইতেছে, এইটা কোনোভাবেই দেখা যায় না!
এডিসন তখন যেইটা শুরু করছে এসির বিরুদ্ধে অর্থাৎ অল্টারনেটিং কারেন্টের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো শুরু করছে। প্রথম কথা উনি বলতেছিলেন এই অল্টারনেটিং কারেন্টের ভোল্টেজ এত বেশি যে এটা মানুষকে মাইরা ফেলতে পারে! এইটার Demonstration উনি রাস্তায় রাস্তায় করতেন। বিভিন্ন প্রাণীদেরকে উনি মাইরা ফেলতেন, ইভেন উনি একটা হাতিকে মারছিলেন এবং এইটা নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি বা ফিল্ম এর মতন একটা কিছু উনি বানাইছিলেন।
যখন দেখতেছে, মানুষ অলটারনেটিং কারেন্টকে এত বেশি পরিমাণে পছন্দ করছে যে এই মৃত্যুর ব্যাপারটা ওদের কাছে আসলে খুব বেশি গায় করার মতোন না। তখন উনি মানুষ মারারও একটা ফন্দি করছিলেন। ৬ আগস্ট, ১৮৯০ সাল Auburn Prison বা Auburn জেলের মধ্যে একজন কয়েদি ছিলো যার নাম Kemmler তাকে এক হাজার ভোল্ট কারেন্ট দিয়ে মারার চেষ্টা করা হইছে।
মাঝপথে জেনারেটরের চার্জ শেষ হওয়ার কারণে এই কারেন্ট সাপ্লাইটা বন্ধ করে দিতে হইছে। এন্ড তখনও তিনি মরেন নাই। তারপরে জেনারেটরের ভোল্টেজ ডাবল করে দিয়ে তাকে আবার মারার জন্য নেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত তাকে মারা হয়। Westinghouse যেটা বলছিলেন, এরচেয়ে একটা কুঠার দিয়ে তাকে মাইরা ফেললেও অনেক ভালো হইতো। আলভা এডিসন এত বাজে গেম খেলতেছিলেন, এবং তিনি এইটাও প্রস্তাব করছিলেন যে Westinghouse কে হারানোর জন্য Electrocution অর্থাৎ মানুষকে যে ইলেক্ট্রিফাই করে মারা এইটার একটা নাম দিতে যেটার নাম হবে Westinghoused. তার মানে কী অবস্থা চিন্তা করেন, শত্রুকে মারার জন্য উনি কতদূর যাইতে পারেন! ইভেন নিকোলা টেসলার বিরুদ্ধে উনি কেস পর্যন্ত লড়ছেন। যেই কেসটা শেষ পর্যন্ত নিকোলা টেসলাই জিতছে। যে পেটেন্ট নাকি এডিসনের কাছ থেকে টেসলা নিয়া যাইতেছে, আসলে এইরকম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টমাস আলভা এডিসনে কিন্তু এসি কারেন্টকে আগলায়া ফেলছিলেন। উনার যে ডিসি কারেন্ট জেনারেটিং কোম্পানিটা ছিলো যেইটাকে General Electric বলা হয়। ১৮৯২ সালে উনি Thomson-Houston এর সাথে Merge করেন এবং এর মাধ্যমে অল্টারনেটিং কারেন্ট ফ্রেন্ডলি General Electric Company টার আবির্ভাব ঘটে। এন্ড ওইসময় থেকে মোটামুটি এই ক্যাঁচালটা শেষ।
রিসেন্ট মিডিয়াতে নিকোলা টেসলা VS এডিসনের যেই লড়াইটা এইটাকে এত বেশি পরিমাণে হাইলাইট কইরা দেখানো হয়, যে এইটাই নিকোলা টেসলার জীবনের অনেক বড় একটা অংশ। আসলে এইটা খুবই ছোট একটা অংশ ছিল! এডিসনের সাথে মারামারি শেষ হয়া গেছে। এরপরে কিন্তু নিকোলা টেসলা আরো অনেক বড় বড় কিছু Achievement বা ঘটনা ঘটাইছেন যেইটা এই এডিসনের সাথে ঝগড়ার বা কারেন্ট ওয়ারের তুলনায় অনেক অনেক বড় একটা জিনিস! এডিসন আসলে নিকোলা টেসলার জন্য হাতের একটা ময়লা ছিল, খুব সহজ কথায় বললে এইটা। টমাস আলভা এডিসনের ব্যাপারে নিকোলা টেসলার আরেকটা কথা আছে। উনি বলছিলেন, এডিসন মানুষটা এইরকম একজন মানুষ। মনে করেন একটা সুঁই খড়ের গাদার মধ্যে হারায়া গেছে। এডিসন মানুষটা যেইটা করবে, সে প্রত্যেকটা খড় একটা একটা কইরা চেক করবে।
কারণ ওর ওইযে অধ্যবসায়ের একটা ইয়ে আছে আমরা বাল্বের কাহিনী পড়ছি না যে সে কতগুলা বাল্ব পোড়াইতে পোড়াইতে পোড়াইতে পোড়াইতে একসময় যায়া একটা ভালো বাল্বের রেসিপি বা ফর্মুলা আমাদের সামনে আনতে পারছে। নিকোলা টেসলার ওই জিনিসটা পছন্দই ছিলো না। এডিসন ওই খড়ের গাদার সুঁচটা বের করতে প্রত্যেকটা খড় চেক করার চেয়ে, তিনি পছন্দ করতেন যে এইরকম কোনো একটা ম্যাথমেটিক্যাল ফর্মুলা আছে কিনা যেই ফর্মুলাটা দিয়ে আমি অনেক কম, ইভেন উনি বলতো ৯৯% কম পরিশ্রমে ওই খড়ের গাদার থেকে সুঁইটা বের করতে পারবো! টেসলার Work Ethic এইরকম ছিল যেইখানে, এডিসনের Work Ethic ছিল তিনি কতটা বেশি পরিশ্রম করতে পারবেন। টেসলা অনেক স্মার্ট ছিল, উনি কত স্মার্টলি কাজটা করতে পারবেন সেইটা চিন্তা করতেন। এন্ড এডিসনকে উনি এইটার কারণে অনেক সমালোচনা করছেন।
নিকোলা টেসলা শেষ বয়সে অনেক বাজে অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তৎকালীন সময়ে শুরুও হয়া গেছিলো। উনার অবস্থা একদম উনি চিকন হয়া গেছিলেন। খাওয়া-দাওয়া খুব বেশি একটা করতেন না। ১৯৪৩ সালে Penn Station এর কাছে একটা হোটেল আছে নাম New Yorker Hotel.
ওইটার ৩৩ নাম্বার ফ্লোরে উনি থাকতেন। তিনের প্রতি কতটা মায়া দেখেন! ওই রুমটার দরজার সামনে একটা সাইন লাগানো ছিল, Do Not Disturb. জানুয়ারির আট তারিখে একজন মেইড ওই সাইনটা উপেক্ষা করেন, এন্ড দরজার ভিতরে ঢুকেন। গিয়ে দেখেন নিকোলা টেসলা মারা গেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮৬ বছর। বলা হয় জীবনের লাস্ট কয়েকটা দিন উনি অনেক বেশি কবুতরের প্রতি Obsessed ছিলেন। কবুতরদেরকে বেশি বেশি খাওয়াইতেন, এন্ড যেইটা বললামই একটা কবুতরের সম্পর্কে। কিন্তু এইটার একটা Alternate Theory ও আছে। বলা হয় যে ওই সময় নাকি নিকোলা টেসলা নিজে মারা যান নাই, ওইখানে একটা দ্বিতীয় বডি রাইখা দেওয়া হইছিলো! আসলেই নিকোলা টেসলা মারা গেছেন কিনা, এই ব্যাপারটা এখনো কেও জানে না! এটা একটা Alternate Theory, সত্যি কিংবা মিথ্যা এইটা এখন আর যাচাই করা পসিবল না!
নিকোলা টেসলার পরিবার লাস্ট পর্যন্ত দাবি করে যে, যখন উনি মারা যান, তার কিছু ফাইল মিসিং ছিল!
ওই মিসিং ফাইলগুলা পরবর্তীতে জানা যায় যে, US Government তারা ওইটা নিয়া গেছিলো। কারণ এইটা কোনো ভুল হাতে পরলে, এইটা বাজেভাবে ইউজ হইতে পারে। ইভেন Wardenclyffe Tower, এইটারও একটা সমালোচনা ছিল। এইটাকে নাকি জার্মানরা তাদের সাবমেরিনের একটা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারে বা জার্মান স্পাই নেটওয়ার্কের এইটা একটা অংশ হইতে পারে। বলে হয়ে থাকে যে নিকোলা টেসলার ইম্পরট্যান্ট যে আবিষ্কারগুলা আছে, তার মধ্যে অনেকগুলাই এখনো Classified, যেইটা জনসম্মুখে আসতে দেওয়া হয় নাই। তবে যতগুলা এখন পর্যন্ত প্রকাশিত ওইগুলা দিয়াই আপনি বুঝতে পারতেছেন যে নিকোলা টেসলা কত বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী ছিল। যার নখের সমান যোগ্যতাও এমন বিজ্ঞানীর নাই তাদেরকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হইছে। অথচ তাকে নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয় নাই। তবে যাই হোক নিকোলা টেসলা কোনো প্রাইজ পাক আর না পাক, উনি মানুষের মনে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনেক বড় একজন বিজ্ঞানী হিসেবেই আখ্যায়িত হয়ে থাকবে। তাকে কোন পুরস্কার কিংবা স্বীকৃতি দিয়ে আপনি মাপতে পারবেন না। তার যে কর্মক্ষেত্রে অবদানটা আছে এবং তার যে টেকনোলজিক্যাল চিন্তাভাবনা। এই চিন্তাভাবনাটাই তাকে অমর করে রাখবে!
নিকোলা টেসলার বিখ্যাত কিছু উক্তি:
পুরা ভিডিও দেখেন ইউটিউবে!
Research Affiliates:
Labid Rahat:- https://www.youtube.com/channel/UCTio…
Alif Arshad:- https://www.facebook.com/alif.arshad.b
For Gaining more knowledge on this topic:
• The Transmission of Electric Waves Round the Earth
• Nikola Tesla And The Planetary Radio Signals
• NIKOLA TESLA AND THE SECRETS OF THE PHILADELPHIA EXPERIMENT
• The Birth Chart of Nikola Tesla
So amazing
Take love.