আপনারা যারা Netflix এর ‘Sacred Games’ সিরিজটা দেখছেন, তারা জানেন সেখানে গুরুজী যখন গাইতোন্ডেকে বলিদান দেওয়ার কথা বলেন, তখন ভারতবর্ষের খুবই বিখ্যাত একটা ন্যারেটিভের উদাহরণ দেন যেখানে বৃহত্তর স্বার্থের
জন্যে পিতা তার নিজের পুত্রকে হত্যা করে! যেটাকে হিন্দিতে ওরা ‘Yayati’ বা বাংলাতে ‘যযাতি কমপ্লেক্স’ বলতেছে। এমনিতেও নরমালি আপনারা দেখবেন ছেলেদের সাথে তাদের বাবাদের সম্পর্কটা আসলে কেমন যেনো হয়! মানে খুব একটা ভালো টাইপের হয় না। যেখানে মেয়েদের সাথে তাদের বাবার সম্পর্ক খুবই ভালো হয়। ভাইবেন না জিনিসটা খুব র্যান্ডম! এর পিছনে খুব বড় কিছু ঐতিহাসিক কিংবা সাইকো অ্যানালাইটিক (Psychoanalytic) কিছু কারণ আছে। আজকের আলোচনায় সেসব ব্যাপারগুলো আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। তো চলুন, শুরু করা যাক।
প্রথমে চলেন আপনাদেরকে গ্রীক মিথলজির একটা গল্প শোনাই। থিবস এর রাজা লাওস এর এক ছেলে ছিলো যার নাম ইডিপাস।
ভবিষ্যতবাণী বলতেছিলো এই ইডিপাস তার বাবাকে ভবিষ্যতে গিয়ে হত্যা করবে। সেই হিসেবে ইডিপাস এর বাপ তো আগেই ভবিষ্যতবাণী জানে।
তো ইডিপাস যখন জন্মগ্রহণ করলো, তখন ওর বাবা ওর হাত ও পা বাইধা ওকে একটা পাহাড়ের কোণায় রেখে আসছে যাতে ও মারা যায়! এখন এক রাখাল খুঁজে খুঁজে ওই ছেলেটাকে পাইসে। পাওয়ার পরে ওরা ‘করিন্থ’ এর রাজার কাছে নিয়ে গেছে এবং সেইখানেই ওই ছেলে বড় হইসে।
ইডিপাস যখন আস্তে আস্তে বড় হইলো তখন ও একটা ভ্রমণে যায় এবং ওইখানে গিয়ে একটা বুড়া লোকের সাথে ওর দেখা হয়। ওই বুড়া লোকের সাথে ৫ জন চাকর ছিলো। এখন মাঝখানে কোনো এক কারণে ওই বুড়া লোকের সাথে ওর কথা কাটাকাটি হইসে। রাগের বশত ইডিপাস ওই বুড়া লোক এবং ওর চাকরদেরকে হত্যা করে।
মজার ব্যাপার, ওই বুড়া লোকটাই ছিলো ইডিপাস এর বাবা। সেই বাবা যে ওরে ছোটবেলায় পাহাড়ের কোণায় রাইখা আসছিলো মরার জন্যে। এমনকি ইডিপাস ওরে হত্যা করার অনেকদিন পর্যন্ত জানতোই না যে সেই লোকটাই তার বাপ ছিলো!
এখন ইডিপাস থিবস এর মাঝখান দিয়ে হাঁটতেছে, হটাৎ একটা প্রাণীর সাথে ওর দেখা হয়। প্রাণীটার নাম হচ্ছে ‘স্ফিংস’।
স্ফিংস হচ্ছে এমন একটা প্রাণী যেটা কিম্ভুত কিমারকার টাইপের। এর খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নাই, ও শহরের সামনে বসে শহরের গেট রক্ষা করে বা পাহারা দেয়। ওরে আপনারা হ্যারি পটারের ‘গবলেট অফ ফায়ার’ এ দেখছেন। মিশরের পিরামিডের সামনে আপনারা ওরে বইসা থাকতে দেখছেন। এই প্রাণীর মেইন কাজ হলো এ লোকেদের ধাঁধা জিজ্ঞেস করে। তো ইডিপাস কে ও ধাঁধা জিজ্ঞেস করছে!
“এমন একটা জিনিসের নাম বলো যেই জিনিস সকাল বেলা ৪ পায়ে চলে, দুপুর বেলা ২ পায়ে চলে এবং রাতের বেলা ৩ পায়ে চলে।”
উত্তর খোঁজার জন্যে এত চিন্তা করে লাভ নাই, ইডিপাস এই উত্তর আগেই জানতো। এটার উত্তর হলো “একজন মানুষ”। সে যখন ছোট থাকে,তখন সে ৪ পায়ে হামাগুড়ি দিয়ে চলে, যখন একটু বড় হয় তখন ২ পায়ে চলে, আবার যখন বুড়া হয় তখন ওর লাঠি সহ ২ টা পা অর্থাৎ ৩ পায়ে সে চলে!
খুবই ক্রিঞ্জ একটা ধাঁধা! এটা ইতিহাসে এত বেশি জনপ্রিয় কেনো হইসে এটা আমি জানি না। এখনকার যুগে এটা কেও জিজ্ঞেস করলে টোটালি লেম জোক হিসেবে আখ্যায়িত হইতো! এখন ইডিপাস স্ফিংস এর ধাঁধার এই উত্তরটা দিয়ে দিসে দেখে স্ফিংসের খুবই রাগ উঠছে, তাই ও নিজেই নিজেকে মাইরা ফেলছে! ভালো কথা, মাইরা ফেলছে, ভালো!
এখন ইডিপাস থিবস শহরের ভিতরে ঢুকছে। এখন শহরের মানুষ তো জানে না যে এটা ইডিপাস! ওরা তখন ইডিপাস এর সাথে ওদের শহরের রাণী ‘Jocasta The Queen’ এর বিয়ের ব্যাবস্থা করছে। এখন কথা হইতেছে Jocasta The Queen কিন্তু ইডিপাস এর মা! কারণ থিবস এর রাজা তো ছিলো ইডিপাস এর বাপ! এখন ইডিপাস তার মা কে বিয়ে করছে! এরপর তাদের ঘরে ৪ টা সন্তানও হইসে!
আচ্ছা বুঝছি তো ঝামেলা হইসে! এখন কি আর করার!
অনেক বছর পরে হটাৎ করে পুরো শহরের মধ্যে প্লেগ রোগ দেখা দেয় এবং ভবিষ্যতবাণী করা হয় যে যতক্ষণ না পর্যন্ত “রাজা লাওস এর হত্যাকারী কে?”
এটা বাইর করা না যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই রোগ যাবে না। তো ইডিপাস নিজেই খোঁজা শুরু করছে কে আসলে এই রাজাকে মারছে এবং সে শেষ পর্যন্ত দেখলো যে সে নিজেই ওই রাজাকে মারছে। শুধু এইটাই না, সে এটাও জানতে পারছে যে সে তার নিজের মা কে বিয়ে করছে!
এই জিনিস জানার পরে Jocasta The Queen আত্মহত্যা করে এবং ইডিপাস নিজের চোখ উপড়ে ফেলছে!
এই ছিলো মোটামুটি গল্পটা।
এখন এই গল্পের মূল জিনিসটাকে কেন্দ্র করে ১৮৯৯ সালে বিখ্যাত সাইকো এনালিস্ট (Psychoanalyst) সিগমুন্ড ফ্রয়েড একটা কনসেপ্ট দেন যেটাকে বলা হয় ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’। সাইকো এনালাইসিসে এটা খুবই বিখ্যাত একটা ধারণা এবং এটা ১৯১০ সাল থেকে ফরমালি ইউজ করা শুরু হয়। এটা খুব সিম্পল ভাষায় বলে “একটা ছেলের বয়স যখন ৩ থেকে ৬ বছর থাকে, তখন তার বাপের প্রতি তার একটা শত্রুভাবাপন্ন (Hostile Nature) দেখা যায়।” এই জিনিসটা ফ্রয়েড এইভাবে ব্যাখ্যা করছেন যে যখন ওই সময়টা আসে তখন ওই ছেলের মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে। এই ভয়টা হলো ওর বাপ যেকোনো সময় ওরে ধইরা ওর জিনিসটা কাইটা দিতে পারে! এখন এই জিনিস কাইটা দেওয়া সংক্রান্ত যে Anxiety টা
আছে, এটাকে বলা হয় ‘Castration Anxiety’ এবং এই Anxiety থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে ওই ছেলেটা তখন তার বাপ কে অনুকরণ করা শুরু করে। ওর বাপ কিভাবে হাঁটতেছে, কিভাবে মানুষের সাথে ব্যাবহার করতেছে, তার চরিত্রটা কিরকম, এই সবকিছু সে নিজের মধ্যে গ্রহণ করা শুরু করে। আস্তে আস্তে তখন তার বাপ তার প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে তার একটা আইডল (Idol) হয়ে যায়। একারণে ছেলেদের সাধারণত আইডল হয় তার বাপ। ফ্রয়েড এটাকে ‘লিটল হ্যানস কেস স্টাডি’ দিয়ে ব্যাখ্যা করছে যেটার অফিসিয়াল নাম হচ্ছে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’।
এখন ইডিপাস এর ঘটনার মধ্যে কি হইসিলো, ছেলের জন্যে বাপ মরছে। এই পুরো জিনিসটা ভারতবর্ষে আইসা উল্টায় গেসে যেটাকে ‘যযাতি কমপ্লেক্স’ বলা হইতেছে।যযাতির কাহিনীটা শুরু হইসে মহাভারতে। যযাতি ছিলো নাহুশার ছেলে যে স্বর্গে ইন্দ্র নামে পরিচিত।
এখন যযাতি তার এক বউ শর্মিষ্ঠা ও তার ছেলে পুরু কে খুব পছন্দ করতো। অপরদিকে অন্য বউ দেবযানী ও তার ছেলে যদু কে অবহেলা করতো।
এখন দেবযানীর বাপ শুক্রচার্জ এটার কারণে রাগ করে যযাতিকে একটা অভিশাপ দিসে যে “তোর জীবন যৌবন আর এখন থেকে থাকবে না, তুই তোর যৌবন হারিয়ে ফেলবি!”
সাথে সাথেই যযাতি একজন বুড়া মানুষ হয়ে যায়। শুধু একটি মাত্র উপায়েই সে অভিশাপকে সরাতে পারতো, যদি সে অন্য কোনো মানুষের সাথে এই অভিশাপ টা বিনিয়ম করে। এখন ও গিয়ে দেবযানীর ছেলে যদুকে বলতেছে যে, “তুমি কি আমার এই অভিশাপ টা নিবা?” যদু বলছে যে, “না আমার এই
অভিশাপ নেওয়ার দরকার নাই, আমি আমার জীবন যৌবন নিয়ে খুশি।” এখন ও ওর প্রিয় পুত্র পুরুকে গিয়ে বলছে যে, “তুমি কি আমার অভিশাপ টা নিবা?” পুরু বলছে, “আচ্ছা ঠিকাছে বাবা,আমি নিবো।”
তখন যযাতি পুরুকে রাজা বানায় দেয় আর যদুকে অভিশাপ
দেয় যে ও অনেক উল্টা পাল্টা সন্তান জন্ম দিবে যারা অশুর হবে।
এখন খেয়াল করেন, এই ঘটনাটার মধ্যে পুরুর যৌবন শেষ করে দেওয়া হইসে, এটাকে ‘Malthusian Consept’ বলে। Malthus যে জিনিসটা বলছে, আমাদের এই পৃথিবীর মধ্যে পপুলেশন বা জনসংখ্যা সুচকীয় হারে বাড়তেছে। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের খাবার কি বাড়তেছে? আমাদের সম্পদ কি বাড়তেছে? এই জিনিসগুলো কিন্তু সূচকীয় হারে বাড়ে না, এটা সরলরেখা বরাবর বাড়ে।
তো একটা সময় এই এত বেশি জনসংখ্যার কাছে এত কম খাদ্যদ্রব্য কিংবা প্রাকৃতিক সম্পদ থাকার কারণে ওই জনসংখ্যা মৃত্যুবরণ করা শুরু করবে। খাদ্যের অভাবে মারা যাবে, পানির অভাবে মারা যাবে। এই কনসেপ্ট এর নামই হচ্ছে ‘Malthusian Consept’ যেখানে আপনার প্রজন্ম আর বড় হবে না।
এখানেও ঠিক সেই জিনিসটাই হলো! বাপে যৌবন পাইসে, ছেলের যৌবন নাই, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কেমনে আসবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। এটা ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ এর সম্পূর্ন উল্টা যেখানে ছেলে তার বাপের জন্যে নিজেকে স্যাক্রিফাইস করছে। এটাকে দেবপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায়, একজন ‘Linguistic Professor’, উনি নাম দিসিলেন ‘যযাতি কমপ্লেক্স’।
Sacred Games এর মধ্যেও ঠিক এইটাই হইসে। গুরুজী গাইতোন্ডের কাছে বলছে, “তুমি আমার জন্যে বলিদান দেও।” যেখানে গুরুজী নিজে যযাতি বা পিতার ভূমিকা পালন করতেছেন আর গাইতোন্ডে তার ছেলে পুরুর ভূমিকা পালন করতেছে। এইখানে গুরুজী বুঝানোর চেষ্টা করতেছে এই পৃথিবী আসলে ধ্বংসের সম্মুখীন হবে এবং এটাকে বাঁচানোর জন্যে আমাদের বৃহত্তর স্বার্থে নিজেদের বলিদান দিতে হবে। বম টম ফাটানোর কথাও বলসিলো যেটা শেষে আর দেখায় নাই। কিন্তু গাইতোন্ডে এটার উল্টা কাজ করছিলো এবং পুরা দুনিয়াকে বাঁচানোর জন্যে সে সাইফ আলী খানের (সাতরাজ) কাছে গিয়ে সব প্ল্যান ফাঁস করা শুরু করছিলো। এটা নিয়ে আরো অনেক কাহিনী আছে। আপনারা যারা Sacred Games দেখেন নাই, তারা অবশ্যই Netflix থেকে সিরিজটা দেখে নিবেন।
এই কমপ্লেক্স এর আরেকটা উল্টা ভার্সন দেখা যায় যেটাকে বলা হয় ‘বাবুর কমপ্লেক্স’। সম্রাট বাবুরের কথা আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি। ওর পোলা ছিলো হুমায়ূন। ও একটা অসুখের মধ্যে পরার পর বাবুর প্রার্থনা করছে যে এই অসুখটা যেনো ওর নিজের মধ্যে চলে আসে আর হুমায়ূন যেনো বেঁচে যায়।
এটা কিন্তু আবার ‘যযাতি কমপ্লেক্স’ এর উল্টা। বাপে চাইতেছে মইরা যাইতে, ছেলে যাতে বাইচা যায়! অপরদিকে যযাতির ক্ষেত্রে যযাতি চাইতেছিলো সে যাতে জীবন যৌবন নিয়ে বেঁচে থাকে আর ওর পোলা বৃদ্ধ হয়ে মইরা যাক, ওর কোনোকিছু আসে যায় না। তো যযাতি কমপ্লেক্স এর ঠিক উল্টা কমপ্লেক্স এর নাম হচ্ছে ‘বাবুর কমপ্লেক্স’।
ছেলের প্রতি বাবার যে একধরনের যে Hate থাকে, এই জিনিসটা গ্রীক মিথলজির মধ্যেও অনেকবার আসছে। যেমন, Uranus আর Gaia এর একজন ছেলে ছিলো যার নাম Cronus, যে ১২ জন টাইটান এর মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলো। Uranus মানে স্বর্গ বোঝায় আর Gaia মানে পৃথিবী বোঝায়। এখন Cronus তার মায়ের পরামর্শে তার বাপের জিনিস কাইটা দিসে। গ্রীক মিথলজি অনুসারে এভাবে সে পৃথিবী থেকে স্বর্গ কে আলাদা করছে। এরপরে Cronus রাজা হইসে। ওর যখন বাচ্চাকাচ্চা হইসে, সব বাচ্চাকে সে মেরে ফেলছে। তার কারণ ও নিজেও একটা ভবিষ্যতবাণী দেখে ভয় পাচ্ছিলো যে ওর পোলাদের মধ্যেই কেও ওরে মাইরা ফেলবে। কিন্তু তার পরেও তার এক ছেলে হয়, এই ছেলের নামই হচ্ছে Zeus,
ওরে Cronus মারতে পারে নাই, ওরে ওর মা কোনোভাবে বাচিয়ে দিসে। পরে ভবিষ্যতবাণী অনুযায়ী Zeus আইসা Cronus কে হারাইসে ওরে মারছে এবং যুদ্ধে জয়ী হইসে।
আপনি যদি খুব সম্প্রতি কোনো হিস্টোরি দেখেন, খুব প্রভাবশালী একজন উপন্যাসিক ‘Franz Kafka’, তার বাপ তার উপর প্রচুর পরিমাণে অত্যাচার চালাইসে। এই কারণে সে তার বাপ কে খুব ভয় পাইতো, তার পুরা চাইল্ডহুড এই কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। সে রাতে এমন দুঃস্বপ্ন দেখতো যেগুলো খুবই বিভৎস ধরনের হতো। যেহেতু কাফকা এই স্বপ্নগুলো দেখতো, তাই এই ধরনের স্বপ্নগুলোকে ‘Kafkaesque’ বলা হয়।
এই শব্দটা কিন্তু আপনি অনেকবার শুনছেন। এই ওয়ার্ডটি Franz Kafka থেকেই উৎপন্ন হইসে।
এখন ফ্রয়েড কিন্তু আপনাদেরকে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ সম্পর্কে বলছে। তারপরে আরেকজন খুবই বিখ্যাত মানুষ, নাম Carl Jung,
সে ঠিক উল্টা জিনিসটা বলছে। যেখানে বাপ আর ছেলের মধ্যে একটা শত্রুভাবাপন্ন Nature থাকে, সেখানে বাপ আর মেয়ের মধ্যে খুবই ভালো বা বন্ধুভাবাপন্ন একটা সম্পর্ক থাকে। এটা এতটাই বন্ধুভাবাপন্ন যে এটা মাঝে মাঝে অন্যরকম অ্যাট্রাকশনের দিকেও চইলা যাইতে পারে। এই কমপ্লেক্স এর নাম হচ্ছে ‘Electra Complex’।
আমি এর বেশি আর ব্যাখ্যা করতে পারবো না, আপনারা ডাইরেক্ট দেখতে পারেন, নাইলে আমি প্রচুর হেট খাবো এই জিনিস ব্যাখ্যা করার জন্যে।
এটার সবচেয়ে ক্লাসিক উদাহরণ হচ্ছে ১৯৫৫ সালে Vladimir Nabokov।
উনি একজন রাশিয়ান-অ্যামেরিকান ঔপন্যাসিক। তার একটা উপন্যাস আছে, আমি সিউর আপনারা এই উপন্যাসের নাম শুনছেন। উপন্যাসটি হচ্ছে ‘Lolita’।
খুবই ক্লাসিক একটা উপন্যাস যেখানে ১২ বছর বয়সের একটা মেয়ে যার এক সৎ বাপ থাকে। ওদেরকে নিয়েই এই কাহিনী। এই উপন্যাসটিকে অনেকেই বিংশ শতাব্দীর সেরা উপন্যাসগুলোর একটা বলে মনে করেন।
আপনারা Nymphet নামে একটা ফ্যাশন ডিজাইনের কথা শুনবেন। ১২ বছরের উপরের যে মেয়েরা থাকে, জাস্ট টিনএজে প্রবেশ করছে, এরকম মেয়েদেরকে Nymphet বলে আর ওদের যে ড্রেসআপ এর
স্টাইল থাকে, ওইটাকে Nymphet স্টাইল আপনি বলতে পারেন। এটা Y2K এর খুবই ইম্পর্টেন্ট একটা ফ্যাশন স্টাইল হিসেবে ছিলো। Lolita বলতে সরাসরি আমরা আমাদের মাথার মধ্যে যেটা বুঝি, একজন
খুব সুন্দরী যুবতী মেয়েকে ললিতা নাম দেওয়া হয়। এই উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে ১৯৬২ সালে বিখ্যাত ফিল্ম মেকার Stanley Kubrick একটা মুভি বানাইসিলো এবং ১৯৯৭ সালে।
Adrian Lynn আরেকটা মুভি বানাইসে। দুইটাই খুবই ক্লাসিক মুভি।
এখন এই পুরা জিনিসটাকে এখনকার যে কালচার আছে, এখানে Daddy Issue নামে বলা হইতেছে। আধুনিককালের থিউরিস্টরা বলতেছে এইযে ‘ইডিপাস কমপ্লেক্স’ এর কথা Sigmund Freud বইলা গেসিলো, এটা শুধুমাত্র জেন্ডার এর উপর ডিপেন্ড করে না। এটা যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রে হইতে পারে। স্পেশালি কোনো বাচ্চা এবং তাকে যে লালনপালন করতেছে, তার সাথে তার সম্পর্কটা। এই থিওরিকে বলা হয় ‘Attachment Theory’। প্রথম Attachment Theorist John Bowlby বলছিলেন, ছোটবেলায় যার এটাচমেন্টের স্টাইল যেরকম থাকে, সে বড় হয়ে ওইরকম মানুষ হয়।
যেমন, যার ছোটবেলা খুব সেফ ভাবে কাটছে, কোনো রকম ঝামেলা ছিলো না, তার বাবা মা তাকে সময় দিসে, তাকে তার আত্মীয়স্বজনরা সময় দিসে, ও বড় হয়েও খুব কনফিডেন্ট এবং সিকিউর একটা এটাচমেন্ট স্টাইল মেইনটেইন করে। সে মানুষের সাথে কথা বলতে ভয় পায় না, সে একটা সোসাইটির মধ্যে মিশতে কোন রকম জটিলতার সম্মুখীন হয় না। এটার ঠিক বিপরীতটা হইতেছে Insecure Attachment Style। এটার ৩ টা কারণ আছে।
১. আন হেলদি কিছু ক্লোজ বন্ড থাকে, যেমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো এক স্পেসিফিক সন্তানকে বাবা কিংবা মা বেশি ফেভার করা শুরু করে। ওই জায়গা থেকে অন্য একজন সন্তান একটু Detached ফিল করা শুরু করে। এটা ‘Reply-1988’ এর মধ্যে কিন্তু দেখাইসে।
ওখানে ছোট বোন দক্সানা কে কোনোসময় ডিম দেওয়া হইতো না, এটা নিয়ে ফার্স্ট এপিসোডে সে কান্নাকাটি করছে।
২. Sexual Abuse: ছোটবেলায় এই ধরনের বাজে কোনো এক্সপেরিয়েন্স এর শিকার হইলে, বড় হওয়ার পর এটা তার উপর এফেক্ট করে। আপনি যদি ‘Highway’ তে আলিয়া ভাট এর জীবনকাহিনী দেখেন, দেখবেন এই ব্যাপারটি তুলে ধরা হইসে।
৩. Absentee Dad: আপনার চাইল্ডহুডের সময় আপনার বাবা যদি কাছাকাছি না থাকে, যেমন বিদেশে গেসে বা কাজের কারণে আপনাকে সময় দিতে পারে নাই, এটাও আপনাকে একটা Insecure Childhood দিবে বা Insecure Attachment Style এর মধ্যে যেতে বাধ্য করবে যেটা মূলত একটা Daddy Issue।
তো আজকে এই পর্যন্তই। আজকে যেটা বুঝানোর চেষ্টা করছি, আমাদের মধ্যকার যে ফিলিয়াল বন্ড বা বাবা মায়ের সাথে যে সম্পর্কটা থাকে, ঐটা অনেক ক্ষেত্রে সাইকো এনালাইটিক কারণে অনেক বেশি প্রভাবিত হয়। আশা করি এটা আপনাদের ভালো লাগছে, আরো আশা করি এটার পর আমাকে গালি খাইতে হবে না যদি আপনারা দয়া করেন!
সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ্ হাফেজ।
এই সম্পর্কে পুরো ভিডিওটি দেখুন ইউটিউবে!
Research Affiliates:
Labid Rahat https://www.youtube.com/channel/UCTio…
Alif Arshad https://www.facebook.com/alif.arshad.b
For Gaining more knowledge on this topic:-
• Sigmund Freud/Psychosexual Stages/Oedipal Complex
•What is the relevance of Yayati in Sacred Games?
•Sacred Games: From Aswatthama to Yayati, decoding the meaning behind every episode in season one
•Father And Son Relationships In Greek Mythology
•Even the Greeks had Daddy issues
•King Arthur and the Massacre of the May Day Babies
•What Is Emotional Detachment?
•The Oedipus Complex in Children
•Overview of the Electra Complex in Psychology
•The Different Types of Attachment Styles
•Coping With an Insecure Attachment Style
•Daddy Issues: History, Impact, and How to Cope
•Is There Real Psychology Behind Daddy Issues?
•The Psychology Behind Strained Father Son Relationships