আপনি যদি গত ১০০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত এবং সেলিব্রেটি রাষ্ট্রনায়কের কথা চিন্তা করেন, তাহলে কিন্তু কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রীর নাম উঠে আসবে না। বরং উঠে আসবে এমন সব একনায়কের কথা, যারা তাদের রাষ্ট্রের উপরে শোষন চালিয়েছিলো! এর মধ্যেও আপনারা আলাদা করে একজন মানুষের নাম শুনবেন, যার গোঁফ দুনিয়াজুড়ে টুথব্রাশ গোঁফ নামে পরিচিত এবং যিনি হাত উঁচু করে নিজের বগল প্রদর্শনপূর্বক অদ্ভুত স্যালুট দিয়ে দুনিয়াকে শো অফ করা শিখিয়েছিলেন, তিনি আর কেউ নন, প্লিজ ওয়েলকাম মিস্টার অ্যাডলফ হিটলার!👏👏
আজকের লেখায় আমি হিটলারের এমন পাঁচটি জিনিস নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো নিয়ে হয়তো আপনারা ট্রেডিশনাল মিডিয়ায় খুব একটা আলোচনা শুনতে পান না। তো চলুন শুরু করা যাক।
১. প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে হিটলার কি আসলেই জার্মানির টেস্ট ক্রিকেটারদের হত্যা করেছিলেন এবং জার্মানিতে টেস্ট খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন?
উত্তর হচ্ছে, না! এই ব্যাপারটার একদম কারেক্ট কোনো দলিল নেই। ইভেন হিটলার কিন্তু ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসতেন!
এখন গল্পটা কী ছিল? একটা টেস্ট ম্যাচ হচ্ছিলো, হিটলার ওই টেস্ট ম্যাচটা দেখছিলেন। পাঁচদিন খেলা হওয়ার পর, ওরা বলেছিল যে ম্যাচটা ড্র হয়েছে। তখন হিটলার রেগে গেছেন, যে পাঁচদিন ধরে সময় নষ্ট করে তোমরা খেলেছো, আর এরপরে রেজাল্ট হলো ড্র! এই খেলা আমার দেশে দরকার নাই। তারপর ওনার দেশের টেস্ট ক্রিকেটারদের উনি গুলি করে হত্যা করেছেন এবং জার্মানিতে ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন, এই হচ্ছে গল্পটা। কিন্তু এই গল্পের সত্য কোনো দলিল আমি নিজে খুঁজে পাই নি এবং অনেক ঘাটাঘাটি করার পরে আমি বিভিন্ন আর্টিকেলের মধ্যেও খুঁজে পাই নি।
জার্মানিতে ক্রিকেট সম্পর্কে দুটো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বই আছে, এর একটা হচ্ছে Dan Waddell এর Field of Shadows আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে BBC World Affairs এর ব্রডকাস্টার John Simpson এর লেখা Unreliable Sources.
ঘটনা হচ্ছে, হিটলার তখন সেনাবাহিনীতে ল্যান্স করপোরাল হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। জার্মানিতে তখনো ক্রিকেট খেলা অত বেশি জনপ্রিয় ছিল না। উনি একটা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এবং তখন উনি পাশে দেখতে পান কয়েকজন মানুষ ক্রিকেট খেলছে। তো ওনার ওই খেলাটা সম্পর্কে আগ্রহ জাগলো। ওই হাসপাতালে কিছু ব্রিটিশ নাগরিক কর্মরত ছিল, তাদের থেকেই মূলত খেলাটা এসেছিলো। তো হিটলার একদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, এই খেলার নিয়ম কানুন জেনে উনি নিজে একদিন খেলবেন। তো একদিন তাদের আমন্ত্রণে হিটলার গিয়েছিলেন খেলতে এবং কিছু সূত্রমতে জানা যায়, ওই ম্যাচে হিটলার শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন!
সেই সময়, হিটলার কিন্তু এই ক্রিকেট নিয়ে অনেক পরিমানে রিসার্চ করেন এবং তিনি এই খেলাটার কিছু নিয়ম বদলানোর প্রস্তাব দেন। উনি চাচ্ছিলেন ওনার সেনাবাহিনীর জন্য এই খেলাটাকে কীভাবে প্রচলিত করা যায় এবং এটাকে কিভাবে নাজিফাই করা যায়। যেমন: এক জায়গায় উনি বলেছিলেন যে ব্যাটসম্যানরা কখনো প্যাড পরতে পারবে না। তার কারন এটা unmanly বা un-German, কারণ আপনার মধ্যে পুরুষত্বের প্রকাশ পাচ্ছে না। আপনি একজন জার্মান! আপনি প্যাড পরে কেন খেলবেন! আপনার বল পায়ে লাগলে আপনি ব্যাথা কেন পাবেন! এই কারণে উনি প্যাডের বিরোধী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে ক্রিকেট বলটা আরো একটু শক্ত হওয়া দরকার এবং আরো একটু বড় হওয়া দরকার।
হিটলারের একজন খুবই কাছের লোক এবং গুণগ্রাহী Oliver Locker-Lampson একটা বই প্রকাশ করেন, বইটার নাম হচ্ছে “Adolf Hitler As I Know Him” এবং এই বইতেই হিটলারের এই ক্রিকেট সম্পর্কিত তথ্যগুলো উঠে আসে।
জার্মানিতে কিন্তু এখন আর ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ না। ১৯৯৯ সাল থেকে তারা ICC এর Associate Member হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০১৯ সালের মে মাসে তারা প্রথম T20 ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচ খেলেছে বেলজিয়ামের সাথে, যেখানে ওরা বেলজিয়ামকে ৯ রানে হারিয়েছিল। তবে জার্মান ক্রিকেট টিমের বেশিরভাগ খেলোয়ারই ভারত, পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের শরণার্থী হিসেবে জার্মানিতে এসেছিল, মানে ওরা একচুয়াল জার্মান না।
২. হিটলারকে বুঝতে হইলে আপনাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক পরপর একটা অবস্থার মধ্যে যাইতে হবে, ১৯১৯ সালের ২৮ জুন ফ্রান্সে জার্মানি এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্র শক্তিগুলার মধ্যে একটা শান্তি চুক্তি হয়। যদিও এইটাকে আসলে শান্তি চুক্তি বলা যায় কিনা এই ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। চুক্তিটার নাম হচ্ছে ভার্সাই চুক্তি। এই চুক্তিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পুরাটা ব্লেইম ডিরেক্টলি জার্মানির ঘাড়ে অনেকটা চাপায় দেওয়া হয়। এবং ওইখানে একটা ধারা থাকে যার নাম হচ্ছে War Guilt Clause, ওইখানে বলা হয় জার্মানি তোরা বহুত ঝামেলা করছোস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে, তোদেরকে এই জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কী কী ক্ষতিপূরণ দিবি?
১. ওদের disarmament অর্থাৎ বেসামরিকীকরণ করতে হবে। ওদের মিলিটারির পাওয়ার কমায় ফেলতে হবে।
২. ওদের দেশের অনেক যায়গা ছাইড়া দিতে হবে ওদের প্রতিবেশি রাষ্ট্রগুলার মধ্যে।
৩. ওদেরকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে মিত্র দেশগুলাকে ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যদিও ওই সময়কার US এর প্রেসিডেন্ট Woodrow Wilson বলছিলেন, ব্রো এই জিনিসগুলা তো একটু বেশি harsh হইয়া যাইতেছে জার্মানির জন্য, এইটা কিন্তু এলাও করা উচিত না।
কিন্তু তখন ফ্রান্সের প্রাইম মিনিস্টার ছিল Georges Clemenceau, তিনি বলছেন ভাই আপনার তো জার্মানির সাথে বর্ডার নাই। আমি ফ্রান্স, আমার বর্ডার আছে, আমি জানি আমার কী ক্ষতি হইছে। সো, জার্মানির যে শাস্তি পাওয়ার, তাকে ওইটা পাইতেই হবে।
আপনারা যারা Keynesian Economics সম্পর্কে জানেন, খুবই বড় একজন অর্থনীতিবিদ John Maynard Keynes,
উনি এই ভারসাই চুক্তিটাকে একটা Carthaginian peace ত্রুটি বলছেন। এইটার মানে হইতেছে এই চুক্তিটা আসলে মিস গাইডেড, অর্থাৎ এইটা অন্যায্য জিনিস হইছে জার্মানির উপরে। এইরকম harsh জিনিস জার্মানির উপরে চাপায় দেওয়া উচিত হয় নাই।
এই চুক্তিটার কারণে কী হইছে জানেন, জার্মানির ভিতরে মানুষজন অনেক বেশি ফুসতেছিল, অনেক রাগতেছিল যে কেন আমাদেরকে এত বড় পরিমাণে ক্ষতিপূরণ দিতে হইতেছে এবং জার্মানির ইকোনোমি কিন্তু তখন অনেক খারাপ অবস্থায় চলে গেছিলো, এই ৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উছিলায়।
এই চুক্তিটার নাম কেন নিলাম?
১৯৩৪ সালে হিটলার যখন ক্ষমতায় আসে কিংবা নাজিপার্টি ক্ষমতায় আসে তখন তারা ডিরেক্টলি বলছে, আমরা এই ভার্সাই চুক্তি মানি না, আমরা আর কোনো ধরণের ক্ষতিপূরণ দিবো না এবং জার্মান জাতি যেহেতু আগে থেকেই সাইকোলজিক্যালি এই চুক্তিটার বিরুদ্ধে ছিল, হিটলার যখন তাদেরকে এই প্রস্তাব দিছে, তারা কিন্তু হিটলারকে একদম মাথায় তুইলা ফেলছে এবং হিটলারের জনপ্রিয়তা তখন অনেক বেশি পরিমাণে বাড়ছিল!
এই কারণে ভার্সাই চুক্তিকে নাৎসিপার্টির উত্থানের অনেক বড় একটা কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে এই ব্যাপারে অনেক বিতর্ক আছে যে জার্মানিতে নাৎসিবাদের উত্থানের পিছনে আসলে কি ভারসাই চুক্তির অবদান ছিল নাকি জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্ববাদের অনেক বেশি অবদান ছিল। যাই হোক আমি অনেক বেশি কঠিন কথা বলবো না।
দক্ষিন জার্মানিতে একটা প্রদেশ এর মতোন ছিল, যার নাম হচ্ছে Bavaria.
১৯২৩ সালে হিটলার যায়া ওই প্রদেশটা দখল করতে চাইছিল। এই ঘটনাটাকে বলে Beer Hall Putsch বা এইটা একটা coup d’etat ও বলতে পারেন আপনারা। কিন্তু হিটলারের এই চেষ্টাটা ব্যর্থ হয় এন্ড এর ফলে হিটলারকে কিন্তু জেলে নেওয়া হয়। ওকে পাঁচ বছরের জন্য জেল দেওয়া হয়, কিন্তু উনি মাত্র এক বছরের ভিতরে জেল থেকে বের হয়া আসেন, তার কারন হচ্ছে এই Beer Hall Putsch এর মাধ্যমে হিটলার একটা ন্যাশনাল ফিগারে পরিণত হয় এন্ড মানুষের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি পরিমানে বৃদ্ধি পায়।
এন্ড জেলে বসে বসে কিন্তু উনি তার একটা বায়োগ্রাফি ” Mein Kampf ” লিখছিলেন যেটার ইংরেজি হচ্ছে My Struggle, খুবই বিখ্যাত একটা বই কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে এই বইটাকে ছাপানো অনেকটা নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।
আপনাদের অনেকেরই একটা ভুল ধারণা হয়তো থাকতে পারে যে নাৎসি পার্টি বুঝি সারাজীবনই জার্মানিতে অনেক বেশি জনপ্রিয় ছিল, কিন্তু ব্যাপারটা এরকম না। ১৯৩২ সালে কিন্তু জার্মানিতে একটা ইলেকশন হয় এবং ওই ইলেকশনে কিন্তু হিটলার মানে ওর নাৎসি পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নাই!
জার্মানিতে যে পার্লামেন্ট বা সংসদটা আছে ওইটাকে বলা হয় Reichstag, ওর মধ্যে ৬০৮ টা আসন ছিলো, এর মধ্যে মাত্র ২৩০ টা আসন নাৎসি পার্টি পাইছিলো আর এই নির্বাচনে জিতছিলো একজন ওয়ার হিরো যার নাম Paul von Hindenburg.
এবং উনি হিটলারকে জার্মান চ্যান্সেলার হিসেবে নিয়োগ দেন যেটা বেশ ক্ষমতাধর একটা পদ। আপনারা তো সবাই জানেন যে ১৯২৯ থেকে পুরা ইউরোপ জুড়ে গ্রেট ডিপ্রেশন বা মহামন্দার একটা প্রভাব ছিলো, এবং হিটলার ওইটাকেই কাজে লাগাইছেন জার্মান জাতিকে ফুসিয়ে তোলার ক্ষেত্রে!
হিটলারের যে গোঁফটা আপনারা দেখেন এইটা কিন্তু ওর কোনো ইউনিক স্টাইল না, এই গোঁফটাকে বলা হয় টুথব্রাশ গোঁফ।
হিটলার কিন্তু অনেক আগে থেকেই এই গোঁফ নিয়ে চলে নাই। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ওনার গোঁফটা যেটা ছিলো ওইটাকে বলা হয় হ্যান্ডেলবার গোঁফ। আপনারা যেই গোঁফটা আমির খানকে দেখছেন ২০১৮ সালের ফ্লপ মুভি Thugs of Hindostan এর মধ্যে।
এখন হ্যান্ডেলবার গোঁফের একটা সমস্যা হচ্ছে আপনি যখন মাস্ক পড়েন, গ্যাস মাস্ক তখন ওই গোঁফটা মাস্কের মধ্যে একদম ভালোভাবে এঁটে থাকতে সমস্যা করে।
আর গ্যাস মাস্কের মধ্যে আপনি তো বুঝেনই, গ্যাস যদি কোনোভাবে মাস্কের ভিতরে ঢুকে, এই গোঁফের কারণে কিন্তু তার মৃত্যু হইতে পারে! এই কারণে হিটলার যেটা করছেন দুই পাশ থেকে গোঁফটাকে হচ্ছে একটু কেঁটে দিছেন এবং তারপর এইটা একটা টুথব্রাশ গোঁফ হইছে। এই গোঁফটা এর আগে চার্লি চ্যাপলিন কিংবা অলিভার হার্ডির মতোন কমেডিয়ানরা অনেক বেশি জনপ্রিয় করছিলেন, তাদের একটা ক্যারেক্টারিস্টিক স্টাইল ছিলো এইটা। কিন্তু যখন থেকে হিটলার এটাকে এডপ্ট করছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কিন্তু এই ধরণের গোঁফ রাখা অনেকটা আনফ্যাশনেবল হয়ে গেছে কারণ এই গোঁফটার এসোসিয়েশন ছিলো হিটলারের সাথে, হিটলার এই গোঁফটা রাখতেন!
এখন আসা যাক হিটলারের যে নাজি স্যালুটটা আছে এইটা কোত্থেকে আসছে?
এইটা প্রথম প্রথম ইউজ করতো ১৯২৩ এর দিকে Benito Mussolini, যিনি হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ইতালিতে প্রতিষ্ঠা করছিলেন। ওইটার একটা জার্মান ভার্সনই কিন্তু হচ্ছে হিটলারের এই নাজি স্যালুট। তখনকার দিনের যেই funeral কিংবা বিয়ে এর প্রত্যেকটা যায়গাতেই এই নাজি স্যালুট দিতে হইতো। রেডিওতে মনে করেন হিটলার কথা বলতেছে, রেডিও শোনার মধ্যেই হিটলারকে স্যালুট দিতে হবে, তো হিটলার সাইকোলজিক্যালি কিন্তু ওই সময় জার্মানদের ভিতরে একটা ভয় পয়দা করতে পারছিলেন! এখনকার দিনে মডার্ন জার্মানি অথবা অস্ট্রিয়াতে এই স্যালুট দেওয়া পুরাপুরিভাবে illegal। এবং পোল্যান্ড কিংবা স্লোভাকিয়ার মতোন দেশগুলাতে এই স্যালুটকে একটা ক্রিমিনাল অফেন্স ধরা হয়, আপনাকে শাস্তি দেওয়া হবে এই স্যালুট দেওয়ার জন্য!
রিসেন্টলি মিউনিখে ক্লাস নাইনে পড়া চারজন বাচ্চাকে এই নাজি স্যালুট দেওয়ার জন্য কিন্তু শাস্তিও দেওয়া হইছিলো এন্ড অনেক ফুটবলারকেও শাস্তি দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে ২০ বছর বয়সী একজন গ্রিক ফুটবলার গোল দেওয়ার পরে এই নাজি স্যালুট দেন। এন্ড দেন এইটা নিয়া অনেক কন্ট্রোভার্সি শুরু হয়।
২০০৫ সালে ইটালিয়ান এক ফুটবলার Paolo di Canio এই একইভাবে নাজি স্যালুট দেওয়ার পরে তাকে এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
এইবার আপনাদেরকে Frederick Nietzsche এর একটা ধারণার সাথে পরিচিত করাই,
উনি উনার লেখার মধ্যে একটা নতুন কনসেপ্ট ইন্ট্রোডিউস করেন এটার নাম হচ্ছে Übermensch. Friedrich Nietzsche কিন্তু অনেক বড় একজন জার্মান থিংকার ছিলেন।
এই Übermensch এর ইংলিশটা হচ্ছে সুপারম্যান। হিটলারের নাৎসি পার্টির লোকেরা তার এই ধারণাটাকে ভুলভাবে প্রচার করেন। এন্ড ওরা জার্মান জাতিকে কনভিন্স করানোর ট্রাই করে যে, ভাই তোরা অনেক বড় একটা রক্তের মানুষ, তোরা Aryan, তোদের রক্তটা
অনেক বিশুদ্ধ, তোরা অনেক দামি, তোরা হচ্ছিস Übermensch!
এইভাবে ওরা জার্মানির জাতীয় শ্রেষ্ঠত্ববাদের একটা কনসেপ্ট জার্মান জাতির ভিতরে ঢুকায় দিতে সক্ষম হইছিলো। এখন আপনি যদি জাতি হিসেবে মনে করেন যে আপনার জাতিটাই একদম শ্রেষ্ঠ! অন্য জাতিরা আপনার অধস্তন বা Untermensch!তাইলে কিন্তু আপনি অন্যদেরকে অবজ্ঞার চোখে দেখতেছেন, যেমনটা ওই সময় ইহুদিদেরকে দেখা হইতো যেটাকে বলা হয় antisemitism. যদিও Friedrich Nietzsche এর এই Übermensch কনসেপ্টটাকে ভুলভাবে প্রচার করছিলো তারই বোন Elisabeth Förster-Nietzsche!
এখন কেন করছিলো? কারণ তার জামাই Bernhard Förster, উনি হিটলারের অনেক বড় একজন সমর্থক ছিলেন, ওইগুলাকে উনি নাৎসি উদ্দ্যেশ্যে ব্যবহার করছিলেন ভুলভাবে।
Frederick Nietzsche কে নিয়ে নেটফ্লিক্সে একটা শো আছে আপনারা ওইটা দেখতে পারেন। (“Genius of the Modern World”)
আমি প্রথম প্রথম খুবই অবাক হইতাম যে রক্ত নিয়ে মানুষ আসলে কীভাবে গর্ব করে! হ্যারি পটারের মধ্যে যখন দেখাইতো স্লিদারিনের মানুষজন তাদের পিওর ব্লাড নিয়ে অনেক বেশি গর্বিত, তখন আমি এইটা চমকিত হইতাম বাট এইটার রিয়েল লাইফ এক্স্যাম্পল কিন্তু অনেক পরিমাণে আছে! এন্ড J. K. Rowling এই রিয়েল লাইফ এক্স্যাম্পলগুলাকেই ফ্যান্টাসিতে কাজে লাগাইসেন।
আপনাদের মধ্যে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে যে, ফ্যাসিবাদ আর নাৎসিবাদের মধ্যে মূল পার্থক্যটা আসলে কোন যায়গায়? একটাতো পার্থক্য হচ্ছে ফ্যাসিবাদটা প্রতিষ্ঠা করছিলেন Mussolini ইতালিতে আর নাৎসিবাদটা প্রতিষ্ঠিত হইছে Weimar Republic যেইটাকে বলতেছি আমরা জার্মানিতে। ফ্যাসিবাদে ওরা স্টেইট বা রাষ্ট্রকে অনেক গুরুত্ব দিত যে, স্টেইটের আন্ডারে আমার যত কার্যক্রম আছে সবকিছু পরিচালিত হবে। কিন্তু নাৎসিবাদে আমরা এর আগে যেটা বলছিলাম ওরা রেইসকে অনেক বেশি প্রাধান্য দেয়, ওদের গোষ্ঠীটা জার্মান জাতি, জার্মান জাতিটা অনেক বেশি স্ট্রং, ওরা সুপিরিয়র অন্য জাতিগুলার থেকে। নাৎসিবাদে জার্মান এই শ্রেষ্ঠত্যবাদটা অনেক বেশি পরিমাণে প্রাধান্য পায় উইথ রেসপেক্ট টু রাষ্ট্র, ওরা রাষ্ট্র হিসেবে জার্মানিকে চিন্তা হয়তো করতো না! ফ্যাসিবাদে একটা কনসেপ্ট আছে Class Collaboration. ওরা ওইখানে শ্রেণিভিত্তিক একটা সমাজ রাখতে চাইছিলো, যেইখানে হয়তো বা ইকোনোমিক যেমন: ধনী-গরিব এইরকম থাকে ক্লাস, মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত, এইরকম ক্লাস ওরা প্রেফার করতো ফ্যাসিবাদের ক্ষেত্রে। কিন্তু নাৎসিবাদ বলতো এইরকম ক্লাসভিত্তিক যদি আমার রাষ্ট্র থাকে, তাইলে সেইটা আমাদের Unity এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি বাঁধা! এই কারণে ওরা ক্লাস বেইসড কনসেপ্টটা পছন্দ করতো না। যাই হোক এইরকম আরো অনেকগুলা হয়তো পার্থক্য থাকতে পারে। আমি কিছু লিংক আর্টিকেলের শেষে দিয়ে দিবো, আপনারা ওইখান থেকে পড়াশোনা করতে পারেন। হিটলারকে আপনার যতই পছন্দ হোক না কেন আপনি ওকে গুরু মানতে যাইয়েন না, তাইলে ইউরোপে গেলে আপনাকে পিডানি দেওয়া হইতে পারে!😉
আপনারা অবশ্যই এই চ্যানেলটা ঘুরে আসবেন, এন্ড যদি ভালো লাগে তাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।
We're Girgiti. We provide blog managing services to renowned YouTubers. Currently working with Enayet Chowdhury. Hoping to enhance the working area soon. E-mail: [email protected] | Follow us on Facebook for regular post updates of this blog: facebook.com/girgitibusiness